বর্তমানের বিদ্যালয়ে পাঠরত অগুন্তি শিশুর শৈশব কতিপয় প্রভাবে ভারাক্রান্ত। একদিকে পড়ার চাপ, অন্যদিকে মোবাইলের অনভিপ্রেত হাতছানি তাদের মনের প্রফুল্লতাকে করেছে কলুষিত। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়েই তাদের মনের প্রকৃত বিকাশ হতে পারে। এই ভাবনাকে মাথায় নিয়েই শৈশবের আঙিনায় রবীন্দ্র সংগীত চর্চার বিকাশে অঙ্কুরে রবির আবির্ভাব।অঙ্কুরে অর্থাৎ শিশুর মনের বিকাশের একেবারে প্রারম্ভিক লগ্নেই যাতে তাদের মনে রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং অন্যান্য সঙ্গীতের মাধ্যমে একটি মানসিক ভাবে উচ্চমানের মানুষের মহীরুহের বীজ বপন করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের এই প্রকল্পের ভাবনা।
এই প্রকল্প কে সাথে নিয়ে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পাঠরত প্রায় ৫০০০ ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে তাদের মনকে ভাল করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি। কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রধানত সরকারি বিদ্যালয়ের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণীতে আমরা এই প্রকল্প কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছি। অঙ্কুরে রবি প্রকল্পের শিক্ষক, শিক্ষিকারা যারা বিশুদ্ধ রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষা প্রদান করেন সকলেই রবীন্দ্রসংগীতে উচ্চ শিক্ষিত, অনেকেই সুপরিচিত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। এই প্রকল্পে এই ভাবেই চেনা ছক ভেঙে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন রূপকথা। উন্মোচিত হচ্ছে রবি গানকে শৈশবের অনন্ত সম্ভাবনার মাঝে সঞ্চারিত করার অবর্ণনীয় রোমাঞ্চ। এখানেই শেষ নয়, অনেক বিদ্যালয়ে আমরা গানের জন্য হারমোনিয়ামও প্রদান করেছ।
শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাঙ্গীতিক শিক্ষাকে আরো আলোকিত করার ভাবনায় আমরা নিয়মিত কর্মশালা, সেমিনার আয়োজন করেছি ও করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। আমাদের এই প্রকল্পটিকে একটি সুচারু রূপ দিতে বরেণ্য সংগীত শিক্ষিকা রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালনের রবীন্দ্র সংগীত বিভাগের প্রাক্তণ বিভাগীয় প্রধান ড. স্বপ্না ঘোষাল অঙ্কুরে রবির সিলেবাস তৈরি করেছেন এবং তার অধীনে থাকা একটি কমিটির অন্তর্গত প্রথিতযশা সঙ্গীত শিক্ষিকাগণ গোটা শিক্ষন প্রক্রিয়াকে নিরবিচ্ছিন্ন তত্বাবধান করে থাকেন।
অঙ্কুরে রবি – একটি সময়োপোযোগী উদ্যোগ
